আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তারা সাহসী বটে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালামের ললাটে যেমন ক্লীনম্যান রাজনীতিক উপাধি রয়েছে তেমনি ঘরকুনো তকমাও জুটেছে। এ কমিটির একজন সহ সভাপতি সহ অনেকেই ক্ষমতাসীনদের সাথে সখ্য রাখেন। সখ্যতার পরিমান এত যে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানকে গালি দিলেও ভয়ে মুখে কলুপ এঁটে থাকেন। তবে এবার একটি বিষয়ে হঠাৎ সাহস দেখিয়েছেন তারা।

২০১৫ সালের ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা গোপীনাথ সাহা তার বক্তব্যে বলেন, “জিয়াউর রহমান একটা কুত্তা (কুকুর) ছিলো। ওই কুত্তা মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিভক্তির সৃষ্টি করেছে। নারায়ণগঞ্জেও তার ৮০ জন অনুসারী রয়েছে। তাদের জিন্দাবাদ প্রীতি আমাদের কলংকিত করেছে। তাদের প্রতিহত করতে জয়বাংলার মুক্তিযোদ্ধারাই যথেষ্ঠ।”

গোপীনাথের এ বক্তব্যের পর ওই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস ও মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল। তবে তারা তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতার গালি পুরোপুরি হজম করে চুপসে থাকেন। জিয়াকে গালি দেয়ার বিষয়টি মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করে। সারা শহর এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। তবে সে সময়ে বিএনপির কোন নেতা এর প্রতিবাদ করেনি। মুকুলের আত্মীয় বিএনপির টিকেটে ৩ বার শহর-বন্দর আসনে এমপি হওয়া আবুল কালামও এ নিয়ে কোন রা’ করেননি। তবে মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম সহ নেতৃবৃন্দ হঠাৎ সাহসী হয়ে গেছেন। তারা গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে বন্দরের সোনাকান্দায় একটি সড়কের নাম পরিবর্তন নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বন্দর অংশে ঐতিহ্যবাহি ‘সোনা বিবি সড়কের’ নাম পরিবর্তন করে ‘আলী আহাম্মদ চুনকা’ সড়ক রাখায় এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

বিবৃতিতে তারা বলেন, সোনা বিবি হচ্ছেন বাংলার বার ভূঁইয়ার শ্রেষ্ঠ ভূঁইয়া ঈশা খাঁর স্ত্রী। তার নামেই ওই সড়কটি। কিন্তু আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ২০১৫ সালে এ সড়কের নাম পরিবর্তন করে আলী আহাম্মদ চুনকার নামে নামকরণের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। গত মার্চ মাসে সেই প্রস্তাব পাশ হয়। যা আসলেই মেনে নেয়া যায় না। বিএনপি নেতারা নাসিক মেয়রকে ‘আলী আহাম্মদ চুনকা’ সড়ক নাম পরিবর্তন করে পুর্বের ঐতিহ্যবাহি ‘সোনা বিবি সড়ক’ নাম বহাল রাখার আহ্বান জানান।

তাদের এ প্রতিবাদ নিয়ে নগরের বিভিন্ন জায়গায় নানা রকম আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, যাক এতদিন পর তাহলে বিএনপি নেতাদের সাহস বাড়লো। আবার কেউ বলছে, ওসমান পরিবার যদি এ নাম পরিবর্তন করতো তবে তারা এ সাহস দেখাতো না। তখন বিষয়টিকে তারা ঝামেলা মনে করতো। ক্লীনম্যানের আড়ালে মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতা বরাবরই শান্তি আর আপসের রাজনীতিতে বিশ্বাসী বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এর যু্িক্ত হিসেবে তারা বলছে, জিয়াউর রহমানকে গালি দেয়া গোপনাথ ওসমান পরিবারের আজ্ঞাবহ লোক থাকায় সেদিন সেখানে স্থানীয় বিএনপির ২জন পদধারী নেতা উপস্থিত থেকেও কোন প্রতিবাদ করেননি। স্বেচ্ছায় প্রতিবাদ জানিয়ে কোন বিবৃতি দেননি কালাম সহ অনেক পদধারী বিএনপি নেতা। সেই তারা যখন সোনা বিবির জন্য দরদ দেখাচ্ছেন তখন বুঝাই যায় এখানে তেমন ঝামেলা নেই ভেবেই তারা বিবৃতি দিতে সাহসী! হয়েছেন।